ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

বাগেরহাটের শরণখোলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিক্ষার্থীর মা।

গত ২৩ জানুয়ারি রাতে রায়েন্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান আহম্মেদ ও সহকারী শিক্ষক মো. শাহিনুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে ওই ছাত্রীর মা উল্লেখ করেছেন, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য নাম তালিকাভুক্ত করতে বিদ্যালয়ে যায় তার মেয়ে। ওই সময় শিক্ষক শাহিনুজ্জমান শাহীন তাকে ডেকে যৌন হয়রানিমূলক কথা বলেন এবং শ্লীলতাহানি করেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি শাহিনের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন এবং গালমন্দ করে আমার মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দেন। ওই লজ্জা ও অপমান সইতে না পেরে স্কুল থেকে বের হয়ে কীটনাশক (বিষ) পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমার মেয়ে। পরে প্রথমে তাকে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

স্থানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাহিনুজ্জামান এর আগেও এ ধরণের কাজ করেছেন। স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে তাকে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান আহম্মেদ যখন তাফালবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন, তখন তার বিরুদ্ধেও নানা ধরণের কথা প্রচলিত ছিলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক শাহিনুজ্জামান বলেন, “ওই ছাত্রী নাম দিতে আসলে আমি বলি তোমার নাম দলীয় নৃত্তে দেওয়া হয়েছে। আজকে শুধু পবিত্র কোরান ও গীতা পাঠের বাছাই হবে। তুমিসহ যারা অন্য বিষয়ে নাম দিয়েছো, তারা পরবর্তীতে স্কুলে আসবা। এ সময় বিভিন্ন ক্লাসের বহু শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলো। কী কারণে আমাদের নামে তার মা অভিযোগ করেছেন, তা জানি না।”

প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান আহম্মেদ বলেছেন, “ওই শিক্ষার্থী আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। বরং ওর অসুস্থতার খবর শুনে আমি হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক ওই ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস কে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেছেন, “ওই শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।”

এশিয়ামেইল২৪/এসইউ
 

পাঠকের মন্তব্য