হামলায় জড়িত সন্দেহভাজনদের নাম জানালেন গুলিবিদ্ধ ইমরান খান

পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের লংমার্চে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলটির চেয়ারম্যান ইমরান খানের ওপর যে বন্দুক হামলা ঘটেছে, সেজন্য সন্দেহভাজন তিন জনকে দায়ী বলে মনে করে তাদের নাম জানিয়েছেন ইমরান খান নিজেই। সেই ব্যক্তিরা হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রানা সানাউল্লাহ এবং সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের মহাসচিব আসাদ ওমর এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভিডিওবার্তায় আসাদ ওমর বলেন, ‘এই মুহূর্তে ইমরান খান কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, জাতির উদ্দেশে তিনি যে বার্তা দিতে চান, আমরা যেন তা আপনাদের কাছে পৌঁছে দিই।’

আসাদ ওমর বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান বলেছেন, হামলা যে হতে পারে এমন তথ্য তিনি আগেই পেয়েছিলেন এবং তার বিশ্বাস, ৩ জন ব্যক্তি এই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এই তিন ব্যক্তি হলেন শেহবাজ শরিফ, রানা সানাউল্লাহ ও মেজর জেনারেল ফয়সাল।’

‘তিনি আরও বলেছেন, পিটিআই অবিলম্বে এই ৩ জনের পদত্যাগ চায়। যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

ক্ষমতাসীন জোট সরকারের পদত্যাগ ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরের লিবার্টি চক থেকে লংমার্চ শুরু করে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনাসাফ (পিটিআই)। ৪ নভেম্বর ইসলামাবাদের রাওয়াত এলাকায় শেষ হওয়ার কথা ছিল এই কর্মসূচির। দলের চেয়ারম্যান হিসেবে লংমার্চের শুরু থেকেই গাড়ি বহরের সামনে ছিলেন ইমরান খান।

লংমার্চের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ওয়াজিরাবাদ শহরে সমাবেশ করছিলেন ইমরান খান। সেই সময়েই গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি তার পা লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে।

হামলার পরই তাকে চিকিৎসার জন্য লাহোরের শওকত খানম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইমরান খানের পায়ে অন্তত তিন থেকে চারটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

এদিকে, ইমরান খানকে শওকত খানম হাসপাতালে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই হাসপাতালের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের হাজার হাজার নেতাকর্মী।

ওয়াজিরাবাদে লংমার্চ চলাকালীন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান গুলিতে আহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা অবরোধ করে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বলে জানিয়ে পাকিস্তানের গণমাধ্যম গুলো।

দেশটির জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, কোয়েটায় বিমানবন্দরগামী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা। রাস্তা অবরোধ করায় কোয়েটায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া, করাচির শারে ফয়সাল, উত্তর নাজিমাবাদ, লাঁধি, কায়েদাবাদ, উত্তর করাচি, হাব রিভার মহাসড়ক ও মৌরিপুরেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

নিউজজি/ এএন

পাঠকের মন্তব্য