সন্ত্রাস-নৈরাজ্য নির্মূলে ইসলাম 

ইসলাম মানুষকে উগ্রতা নয়, বিনয়ী হতে শেখায়। অথচ ইসলামবিরোধীরা ইসলামকে কলঙ্কিত করতে, ইসলাম প্রচারক ও সত্যিকার ইসলামপন্থীদের বিতর্কিত করতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করছে। তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কিছু বিপথগামীদের বেছে নিয়েছে। যদিও ইসলাম এসেছে দুনিয়া থেকে কুফরি, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ও বিভিন্ন প্রকারের অশান্তি দূর করবার জন্য। কিভাবে এ ধরনের অশান্তি দূর হবে, সে সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে। আর এ বক্তব্যের বাস্তব নমুনা প্রতিষ্ঠা করে দেখিয়ে দিয়েছেন বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আসুন দেখে নেওয়া যাক, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য নির্মূলে কোরআনের বক্তব্য এবং রাসুলের বাস্তব নমুনা।

পবিত্র কোরআনের বক্তব্য- যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং যমীনে ফাসাদ (অশান্তি) সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে,  তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে কিংবা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। এটি তাদের জন্য দুনিয়ায় লাঞ্ছনা এবং তাদের জন্য আখিরাতে রয়েছে কঠোর শাস্তি।(সুরা মায়েদা- ৩৩)

রাসুলের বাস্তব নমুনা হলো- হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হতে বর্নিত আছে যে, ‘উকল’ গোত্রের কিছু লোক রাসুল (সা.) এর নিকট আগমন করে এবং ইসলামের বাইয়াত গ্রহন করে। অতঃপর মদিনার আবহাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের প্রতিকূল হওয়ায়, তারা রাসুল (সা.) এর কাছে অভিযোগ পেশ করেন। তখন রাসুল (সা.) তাদেরকে বললেন তোমরা চাইলে আমাদের রাখালের সাথে চলে যাও, সেখানে প্রস্রাব ও দুধ পান করার মাধ্যমে তোমাদের চিকিৎসা করা হবে। তারা বলল- হ্যাঁ, (আমরা যেতে চাই) সুতরাং তাঁরা বেরিয়ে পড়ল। অতপর তাদের রোগ সেরে গেল। তখন তারা রাখালকে হত্যা করলো এবং উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলে গেল। রাসুল (সা.) এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি সাহাবাদেরকে তাদের পশ্চাদ্ধাবন (পিছু নেওয়া) করে ধরে আনার নির্দেশ দেন। পরে তাদেরকে পাকড়াও করে রাসুল (সা.) সামনে পেশ করা হয়। তখন তাদের হাত-পা কেটে ফেলা হয়, এবং চোখে গরম শলাকা ভরে দেয়া হয়। অতঃপর তাদেরকে রোদে ফেলে রাখা হয়, ফলে তারা ছটফট করে মৃত্যুবরন করে। (বুখারী) সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে ঐ লোকগুলো ছিল উকিল গোত্রের কিংবা উরাইনা গোত্রের (মুসলিম ৩/১২৯৬) (সূত্র- তাফসীরে ইবনে কাসির ৬৫০-৬৫১)।

বর্তমান সময়ে যদি এমন একটি বিচার কার্যকর করা হতো তাহলে সন্ত্রাসী এবং অশান্তিকর কৃতকর্ম থেকে মানুষ অনেকটায় সরে আসতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই আইন বাস্তবায়ন করার জন্য সঠিন শাসন ব্যবস্থার বিকল্প নাই।

লেখক- আ. স. ম আল-আমীন 
আহবায়ক, বাংলাদেশ কওমী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর পূর্ব

এই লেখার সাথে পত্রিকার কোনো সম্পর্ক নেই, এটা একান্তই লেখকের ব্যক্তিগত মতামত।

পাঠকের মন্তব্য